শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪

ক্রিকট্র্যাকারের কথিত‌ প্রতিবেদন ও ফেসবুকে মাশরাফির আক্ষেপ

মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। ছবি: ফেসবুক থেকে
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৫২

ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকারের কথিত বাংলাদেশের ‘শীর্ষ ধনী’ ক্রিকেটারের তালিকা নিয়ে আক্ষেপের কথা জানালেন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।
এর আগ ফেসবুকে ভাইরাল হয় কথিত সংবাদটি, যেখানে বলা হয়েছে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন মাশরাফি।

অবশ্য ক্রিকট্র্যাকারে এখন আর প্রতিবেদনটি দেখা যাচ্ছে না।

এই তালিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাশরাফি ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা সম্পদ আছে বলে হিসাব দেন। মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে থেকে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেন কিভাবে এই সংসদ সদস্য।

‘টপ টেন রিচেস্ট বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি ২৩ অক্টোবর প্রকাশ করেছিল ক্রিকট্র্যাকার।


ক্রিকট্র্যাকার ক্রিকেটের স্কোর, সংবাদ ও প্রতিবেদনভিত্তিক একটি ভারতীয় সাইট যেটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ সাজ্জাদ পাশা। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা সাইটটি ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

এক দশক ধরে ক্রিকট্র্যাকার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে স্কোর, বিশ্লেষণ, প্রিয় তারকার সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদনের জন্য সমাদৃত। নিজেদের কন্টেন্ট প্রকাশের পাশাপাশি সাইটটি ভক্তদের কিছু লেখাও ছাপায়। এমনই একটি লেখা ছিল তেজস রাঠির কথিত এই প্রতিবেদন। পরে এটি সরিয়ে নেয় ক্রিকট্র্যাকার কর্তৃপক্ষ।

ক্রিকট্র্যাকারের ক্রিকেট অ্যাপিল নামে একটি বিভাগ রয়েছে, যেখানে ফ্রিল্যান্স লেখক ও ভক্তদের লেখা প্রকাশ করা হয়। ফ্রিল্যান্স ক্রিকেট লেখক তেজস রাঠির আলোচিত প্রতিবেদনটি ক্রিকেট অ্যাপিল বিভাগেই প্রকাশিত হয়েছিল।

তেজসের আরেকটি প্রতিবেদন ২৩ অক্টোবর ক্রিকেট অ্যাপিল বিভাগে ছাপা হয়। এর শিরোনাম ‘টেন মোস্ট পপুলার বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স অ্যান্ড দেয়ার ওয়াইভস’ (জনপ্রিয় ১০ বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও তাদের স্ত্রী)।


‘যাচ্ছেতাই’ লেখায় আক্ষেপ মাশরাফির

কথিত শীর্ষ ধনী ক্রিকেটারের তালিকা নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মাশরাফি মোর্ত্তজা।

তিনি লেখেন (বাক্য ও বানান অপরিবর্তিত), ‘ভিনদেশি কোনো হাবিজাবি সস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সেসবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদের সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে!

‘দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজখবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা না হয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা সস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত...!’

নির্বাচনী হলফনামায় মাশরাফির সম্পদ কত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় হলফনামায় মাশরাফি চাকরিসহ বিভিন্ন খাত থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী তখন তার অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৯ কোটি ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫১ টাকা। আর স্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৫ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
সে অনুযায়ী গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মাশরাফির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য সব মিলিয়ে ছিল ১৪ কোটি ৬০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১ টাকা।


গাজায় আবারও ইসরায়েলের হামলা, ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে। এই ভূখণ্ডজুড়ে চালানো পৃথক কিছু হামলায় তারা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলার কারণে এখন পর্যন্ত রাফা ছেড়ে পালিয়েছেন ৮ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।

আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় আকাশ ও স্থলপথ জুড়ে চালানো হামলায় কমপক্ষে ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া রাফায় হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের ব্যাপক লড়াই চলছে বলেও জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এবং হামাসের সশস্ত্র শাখা।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো রাফার আরও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে, শহরের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ইবনার দিকে অগ্রসর হয়েছে এবং তিনটি পূর্ব শহরতলিতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী আরও পশ্চিমে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ইবনার প্রান্তে রয়েছে, যা ঘনবসতিপূর্ণ। তারা এখনও এটি আক্রমণ করেনি।’

তিনি রয়টার্সকে আরও বলেন, ‘আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি, এবং আমরা দেখছি যে সেনারা আক্রমণ করেছে এবং সেখান থেকে কালো ধোঁয়া উঠছে।’

এই মাসে গাজার উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে একযোগে ইসরায়েলি হামলার ফলে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে এবং ইসরায়েলি বাহিনী সাহায্য প্রবেশের প্রধান প্রবেশ পথও বন্ধ করে দিয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিও বাড়িয়েছে।

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা ছাড়াই রাফাতে স্থল হামলা শুরু করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা গাজার দক্ষিণের এই শহরটিতে হামলার জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে সমালোচনাও করেছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, সেখানে হামাস যোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে তাদের অবশ্যই অগ্রসর হতে হবে।

গাজায় পরিচালিত প্রধান সাহায্য সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস বলছে, চলতি মে মাসের প্রথম দিকে ইসরায়েল রাফা শহরটিতে হামলা শুরু করার পর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ৮ লাখেরও বেশি মানুষ রাফা থেকে পালিয়ে গেছেন।

গাজায় নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের জরুরি প্রতিক্রিয়া নেতা সুজে ভ্যান মিগান বলেছেন, অনেক বেসামরিক নাগরিক এখনও সেখানে আটকে আছেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাফা শহরটি এখন তিনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিশ্বের সমন্বয়ে গঠিত: পূর্ব দিকটি মৌলিক যুদ্ধ অঞ্চল, মাঝামাঝি অঞ্চলটি ভৌতিক শহরে পরিণত হয়েছে এবং পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত জনবহুল জনগোষ্ঠী শোচনীয় পরিস্থিতিতে বসবাস করছে।’

নৃশংস হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল খাবার পানীয়, খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানি সরবরাহের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং গাজাজুড়ে বেশ কয়েকটি হাসপাতালও বন্ধ করতে বাধ্য করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে বিদ্যুৎ জেনারেটরে ‘কয়েক মিনিটের’ জ্বালানি অবশিষ্ট রয়েছে। জ্বালানি শেষ হলে ১৩০০ জন রোগীর সেবাও শিগগিরই বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, গত বুধবার যুদ্ধে তাদের আরও তিন সৈন্য নিহত হয়েছে। এতে করে গত ২০ অক্টোবর থেকে গাজায় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সংখ্যা বেড়ে ২৮৬ জনে পৌঁছেছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে ৩৫ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ।

বিষয়:

রাইসির জানাজায় ১০ লাখ জনতা

ইমামতি করলেন খামেনি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের জানাজায় অংশ নিয়েছে ১০ লক্ষাধিক জনতা। জানাজায় ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলি খামেনি।

আজ বুধবার সকালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইব্রাহিম রাইসিসহ দুর্ঘটনায় নিহত আটজনের মরদেহের কফিন নিয়ে আসা হয়। জানাজা নামাজ শেষে মরদেহগুলোতে লাখো জনতা শ্রদ্ধা জানান। তেহরানে শেষযাত্রা অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মরদেহগুলো তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাড়িতে করে আজাদি স্কয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানাজার নামাজের একটি ভিডিও খামেনির এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধ খামেনি লাঠিতে ভর করে হাসিমুখে মরদেহগুলোর কাছে এগিয়ে আসছেন। এরপর তিনি সমবেত সকলকে নিয়ে জানাজার নামাজ পড়েন।

শোকার্ত জনতার হাতে ছিল রাইসির ছবিসহ নানা বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড। এর আগে তাবরিজ ও কোম শহরেও শেষযাত্রায় মানুষের ঢল নামে।

এর আগে মঙ্গলবার, তাবরিজ, কোম এবং তেহরানের গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং লেবানিজ হিজবুল্লাহ প্রতিরোধের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাইম কাসেমসহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অক্ষের নেতারা। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরা জানাজায় অংশ নেন।

সোমবার সকালে ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। ওই দুজন ছাড়াও পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, তাবরিজের জুমার নামাজের খতিব হোজ্জাতোলেস্লাম আল হাশেম এবং আরও কয়েকজন সেই হেলিকপ্টারের আরোহী ছিলেন।

রাইসি’র বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনির স্থলাভিষিক্ত হবেন বলে ব্যাপকভাবে আশা করা হয়েছিল।

রাজধানীতে প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টকে ‘সেবার শহীদ’ হিসেবে সম্বোধন করে বিশাল ব্যানার প্রদর্শন করতে দেখা যায়। অপরদিকে রাইসি’র বিরোধিরা ‘সুবিধাবঞ্চিতদের সেবককে বিদায়’ লিখে ব্যানার উড়াচ্ছে।

তেহরানের বাসিন্দারা তাদের ‘সেবার শহীদের জানাজায় যোগদান’ করার আহ্বান জানিয়ে মুঠো ফোনে বার্তা পেয়েছেন।

রাষ্ট্রীয় মিডিয়া পরিবেশিত খবরে বলা হয়, শোক মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে শহরের কেন্দ্রস্থলে সুবিশাল ইঙ্গেলাব স্কোয়ারে যাওয়ার কথা রয়েছে। এতে বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করবেন।


ভিয়েতনামের নতুন প্রেসিডেন্ট তো লাম

ভিয়েতনামের নতুন প্রেসিডেন্ট তো লাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভিয়েতনামের জননিরাপত্তামন্ত্রী তো লামকে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। আজ বুধবার লামকে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। খবর রয়টার্সের।

দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি গত সপ্তাহে লামকে প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিল। তারপর গোপন ব্যালটে লামের মনোনয়নকে অনুমোদন করে একটি প্রস্তাব পাস হয়। তখন থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের পদে লামই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী।

জননিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে লাম (৬৬) দেশটির দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ‘জ্বলন্ত চুল্লি’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই অভিযান ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছিল। তবে সমালোচকরা এই অভিযানকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আড়ালে ঠেলে দেওয়ার উপায় হিসেবেও দেখেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

২০১৬ সাল থেকে লাম জননিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং দেশটিতে মানবাধিকারের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। মাত্র এক বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত মার্চে দুর্নীতির দায়ে পদত্যাগ করেন ভিয়েতনামের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। ভিয়েতনামে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছরের মাথায় পদত্যাগকারীদের মধ্যে ভ্যান থুং দ্বিতীয় ব্যক্তি। এই অভিযানের ফলে অসংখ্য রাজনীতিবিদকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং প্রচুর ব্যবসায়ীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে।

ক্ষমতা গ্রহণের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছিলেন ভ্যান থুং। ধারণা করা হয়েছিল, ভ্যান থুং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি নাগুয়েন ফু ট্রংয়ের কাছের মানুষ।

আজ একদলীয় রাষ্ট্রটির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতভাবে লামকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে লাম বলেছেন, তিনি ‘দৃঢ় ও অবিচলভাবে’দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।

ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টকে বহুলাংশে আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করতে হয়। তারপরও দেশটির শীর্ষ চারটি রাজনৈতিক অবস্থানের (তথাকথিত চার স্তম্ভ) অন্যতম এ পদ। অন্য তিনটি হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান, প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের স্পিকার। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানের পদটি দেশটির শীর্ষ পদ। বিশ্লেষকদের ধারণা, লাম পরে পার্টি প্রধানের পদের প্রার্থী হতে পারেন।


আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞার আভাস যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েলের নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) প্রসিকিউটরদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি মার্কিন আইন প্রণেতাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করবেন।

কংগ্রেসের এক শুনানিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভুল এই সিদ্ধান্তের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি ‘প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’। তার এই ঘোষণা এল এমন সময়,
যখন আইসিসি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য রিপাবলিকানদের চাপ বাড়ছে। খুব তাড়াতাড়ি, হয়তো এই সপ্তাহে এ বিষয়ে ভোট হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য দেশ নয়। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সিদ্ধান্তের সময় আইসিসির কৌঁসুলিদের সমর্থন করেছে দেশটি।

গত মঙ্গলবার শীর্ষ রিপাবলিকানদের একজন জেমস রিশে, সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটিতে ব্লিঙ্কেনকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি আইসিসির ‘একটি দেশের স্বাধীন, বৈধ এবং গণতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়া থাকা সত্ত্বেও তাদের বিষয়ে নাক গলানোকে’ সমর্থন করবেন কি না।

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দলমত নির্বিশেষে আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। এটা করতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একটা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কোনো প্রশ্নেরই অবকাশ নেই।’

আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান গত সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ারি জারির আবেদন করেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

হামাসের তিন কর্মকর্তা গাজার নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, হামাসের কাশেম ব্রিগেড মিলিটারি উইংয়ের কমান্ডার মোহাম্মদ দাইফ এবং হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছেন করিম খান।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করাটা ‘আপত্তিকর’। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনো সমতা নেই।

ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ পরিচালনার বিষয়ে এই আদালতের তদন্তের পরিধি বাড়ায় কংগ্রেসে আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের অন্তত দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এ মাসের শুরুতে টেক্সাসের রিপাবলিকান চিফ রায়ের উত্থাপন করা একটি বিলের সমর্থনে ক্যাপিটাল হিলে এর সমর্থন বাড়তে শুরু করে।

সেই বিলে বলা হয়েছে, আইসিসির যেসব কর্মকর্তা এ মামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে তাদের যেকোনো ভিসা প্রত্যাহার এবং দেশের ভেতরে তাদের যেকোনো সম্পত্তি লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। এটা অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সুরক্ষিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না করে।

রিপাবলিকান হাউসের অন্তত ৩৭ জন আইন প্রণেতা এ প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। তাদের মধ্যে রিপাবলিকান চেম্বারের তৃতীয় সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কিংয়ের এলিস স্টেফানিকও রয়েছেন। স্টেফানিক নতুন করে ইসরায়েল সফর করেছেন। সেখানে নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, নেসেটে বক্তব্য দিয়েছেন এবং গাজায় বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, ‘গণহত্যাকারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় এ আদালত একটি শান্তিপূর্ণ জাতিকে তিরস্কার করেছে।’

এই বিলটি সমর্থনকারী আরেকজন রিপাবলিকান কেন্টাকির অ্যান্ডি বার বলেছেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির এ মামলাটি আরও বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে, এটাকে নিষেধাজ্ঞা দিতে পরিপূর্ণভাবে কাজ করতে হবে।’

যদিও ডেমোক্রেটিক আইন প্রণেতারা এই প্রচেষ্টার পেছনে থাকবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। গত কয়েক মাস ধরেই বাইডেনের ইসরায়েল পলিসির সঙ্গে দলটির মডারেট এবং উদারপন্থি উইং বেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কারণ তরুণ উদারপন্থি ভোটাররা নেতানিয়াহুর সরকারের গাজায় অভিযানের আরও কঠোর সমালোচনা করতে প্রেসিডেন্টকে চাপ প্রয়োগ করেছে।

বাইডেনের গত সপ্তাহে ইসরায়েলে অস্ত্রের চালান দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্তের পক্ষে খুব কম ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, তাদের একজন ওহাইওর গ্রেগ ল্যান্ডসম্যান। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, ‘আইসিসিকে একটি যথাসম্ভব শক্ত বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে’ কংগ্রেস দলমত নির্বিশেষে তিরস্কার করবে বলে আশা করেন তিনি।

এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত উত্তেজনা ও বিভাজন আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ইসরায়েলবিরোধী ষড়যন্ত্র আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং সর্বোপরি এটা আইসিসির বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে এক বিবৃতিতে বলেন তিনি।

নেতানিয়াহুকে কংগ্রেসের এক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে মঙ্গলবার রিপাবলিকান হাউস স্পিকার মাইক জনসন সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাটদের একজন চাক শুমারকে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করতে আহ্বান জানিয়েছেন। মার্চে শুমার ইসরায়েলে নতুন নির্বাচনের আহ্বান করেছিলেন কিন্তু সোমবার তিনি আইসিসির মামলাকে ‘নিন্দনীয়’ বলেছেন।

সিনেটর ক্রিস কুনস, ডেলাওয়্যারের একজন ডেমোক্র্যাট এবং সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য বিবিসিকে বলেছেন, আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না সে বিষয়ে সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উভয় দলের বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন কুনস। কিন্তু কিছু বামপন্থি ডেমোক্র্যাট আইসিসির কার্যক্রমের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

মিনেসোটার কংগ্রেসওমেন ইলহান ওমর বলেছেন, আইসিসির অভিযোগগুলো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এর কাজকে সমর্থন করা উচিত যেমনটা অতীতে লিবিয়ার মামলার সময় করা হয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানার এই আবেদন নিছকই একটা বিচারিক প্রক্রিয়ার সূচনা। আইসিসি একটা কার্যকরী আদালত, যেখানে দোষী সাব্যস্ত, খালাস এবং বরখাস্ত করা হয়। যেমনটা আমরা একটা নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক বিচার বিভাগ থেকে আশা করি।’

রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন হাউস বা ডেমোক্রেটিক নিয়ন্ত্রিত সিনেটের কেউ এখনো এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জন্য কোনো প্রচেষ্টা করেছে কি না তা এখনো অস্পষ্ট। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেরিন জ্যঁ পিয়ারি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আইন প্রণেতাদের সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

রাশিয়ার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রতিপক্ষের ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা অনেক বেশি কৌতূহলোদ্দীপক।


ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে তিন ইউরোপীয় দেশ- স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। এসময় দেশগুলোর বক্তব্যে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

তবে তাদের ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। এটিকে একটি ‘বিকৃত পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা বলেছে “এটি কেবল অস্থিতিশীলতাকেই বাড়িয়ে তুলবে”।

পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে থেকে নিজের দূতকে ডেকে পাঠিয়েছে ইসরায়েল।

অসলোতে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোর, মাদ্রিদে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ এবং ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস ২৮শে মে’র মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে এর মধ্যে দিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার উদ্যোগের একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটলো।

জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ১৪০টি দেশ ইতোমধ্যেই রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বাকি দেশগুলো এখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

মাদ্রিদে পার্লামেন্টে এ বিষয়ে এক বক্তৃতায় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু “এখনো বধিরের মতো খেলছেন... তিনি হাসপাতাল ও স্কুলে বোমাবর্ষণ করেই চলেছেন এবং নারী শিশুদের ক্ষুধা ও ঠাণ্ডার শাস্তি দিচ্ছেন”।

“আমরা এটা হতে দিতে পারি না। আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কোনো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড না রেখেই ইউক্রেনে যেমনটি করা হয়েছে। আমাদের মানবিক সহায়তা পাঠাতে হবে, শরণার্থীদের সাহায্য করতে হবে যা আমরা করছি। কিন্তু আরও করতে হবে,” বলেছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, “আমরা অনেক কারণে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছি এবং তিন শব্দে সেটা আমরা বলতে পারি- শান্তি, ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিকতা। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে টু-স্টেট সলিউশনকে সম্মান জানানো হয়েছে।”

উল্লেখ্য, সমাজতন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ কয়েক মাস ধরেই রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় পার্টনার দেশগুলোর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে প্রভাবিত করতে না পারলেও আয়ারল্যান্ডের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিলেন।

সানচেজ বলেছেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী সপ্তাহে দেশটির মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত করা হবে, যাতে দেশের মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটেছে এবং এটিই সঠিক পদক্ষেপ।

অন্যদিকে, ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেছেন, দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হলো শান্তির জন্য একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ।

তিনি বলেন, অসলো শান্তি চুক্তির পর তিন দশক পেরিয়ে গেছে। সম্ভবত এটাই সবচেয়ে টেকসই ও সমন্বিত শান্তি সমঝোতা। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অনন্তকাল অপেক্ষা করা যাবে না, যখন সেটা করার সঠিক সময় এখনি।”

এদিকে, অসলোতেও এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোর। তিনি বলেছেন “দুই-রাষ্ট্র সমাধানটাই (টু স্টেট সলিউশন) ইসরায়েলের স্বার্থে সবচেয়ে ভালো। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের নিজেদের রাষ্ট্রে শান্তিতে বসবাসের অধিকার আছে। ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের মৌলিক অধিকার আছে।”

প্রসঙ্গত জাতিসংঘের এক সাম্প্রতিক চিঠি থেকে জানা যায় যে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ১৪০টি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতি দানকারী দেশগুলোর মধ্যে আছে আরব জাতি গ্রুপের ২২টি দেশ এবং ৫৭ সদস্যের ওআইসি সদস্যভুক্ত দেশ এবং ১২০ সদস্যের জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনভুক্ত দেশ।

ইসরায়েল কখনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকার করে না এবং এখনকার ইসরায়েলি সরকার পশ্চিম তীর ও গাজা মিলিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধী।

চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন যে ‘সহযোগী দেশগুলোকে নিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইস্যুটি দেখা যেতে পারে’।

তবে তিন দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে ‘বিকৃত পদক্ষেপ‘ হিসেবে দাবি করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয বলেছেন, ‘আজকের ঘোষণা ফিলিস্তিনি মানুষ ও বিশ্বকে একটি বার্তা দিয়েছে: সন্ত্রাসবাদ দিয়ে অর্জন হয়েছে।’

তিনি বলেন, “সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস হলোকাস্টের পর ইহুদিদের ওপর সবচেয়ে বড় গণহত্যা চালানোর পর, সবচেয়ে জঘন্য যৌন সহিংসতার পর, এসব দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে হামাসকে পুরস্কৃত করার পথ বেছে নিয়েছে। এই বিকৃত পদক্ষেপ সাতই অক্টোবরের ভিকটিমদের স্মৃতির প্রতি অবিচার এবং ১২৮ জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টার প্রতি বড় আঘাত এবং হামাস ও ইরানি জিহাদিদের বড় সহায়তা, যা ইসরায়েলিদের আত্মরক্ষার অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং শান্তির সুযোগ কমাবে।”

তবে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেছেন, “ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছু নয়, এটা ইহুদিদের বিরুদ্ধেও নয়।”


৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প দেখল ইতালি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প অনুভূত হলো ইতালির নেপলসে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইতালির জাতীয় ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্স অ্যান্ড ভালকানোলজি (আইএনজিভি)-এর তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৪।’

এর আগে, গত সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৮ টায় ইতালির ক্যাম্পি ফ্লেগ্রেই সুপার আগ্নেয়গিরিতে আঘাত হানে ভূমিকম্প। যার ফলে কেন্দ্রস্থল পোজুলি শহরে এবং প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে নেপলস শহরে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। মোট ১৫০টির বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।

ভূমিকম্পের কারণে নেপলস শহরের আশেপাশে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বাড়িঘর থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বহু স্কুলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বিষয়:

নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় ৪০ জন নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে বন্দুকধারীদের হামলায় প্রায় ৪০ জন খনিতে কাজ করা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। জানা যায়, বন্দুকধারীরা মোটরবাইকে করে এসে আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, গ্রামের লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়েছে এবং বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।

প্লাতু রাজ্যের ওয়াসে জেলায় গত সোমবার রাতের দিকে ওই হামলা চালানো হয়। দীর্ঘদিন ধরেই সম্পদ নিয়ে বিরোধ এবং আন্তঃসাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কারণে ওই অঞ্চলে অস্থিরতা চলছে।

রাজ্যের তথ্য কমিশনার মুসা ইব্রাহিম আশোমস টেলিফোনে এএফপিকে জানান, সশস্ত্র ব্যক্তিরা জুরাক সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা গ্রামবাসীর ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে এবং বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি ৪০ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জুরাক একটি জনপ্রিয় খনি সম্প্রদায়। স্থানীয় যুব নেতা শাফি সাম্বোও নিশ্চিত করেছেন যে, সেখানে হামলার ঘটনায় অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছে।

জিঙ্ক এবং সীসায় সমৃদ্ধ ওয়েসে জেলা। এ ছাড়া প্লাতু রাজ্য টিনের খনি শিল্পের জন্য বেশ পরিচিত। নাইজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই যাযাবর পশুপালক এবং মেষপালকদের মধ্যে বিরোধের কারণে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চারণভূমিতে পানির প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য সম্পদ যেমন রাজ্যের ধাতব মজুত নিয়ে দুপক্ষের বিরোধের কারণে উত্তেজনা বাড়ছে।

উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর-মধ্য নাইজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভারী সশস্ত্র অপরাধী চক্রগুলোও সক্রিয় রয়েছে। তারা মুক্তিপণের জন্য অপহরণ এবং লুটপাট করতে প্রায়ই বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে থাকে।

বিষয়:

দুই সপ্তাহে গাজায় ৯ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ

উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ গাজা অভিমুখে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ঢল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় বিগত দুই সপ্তাহে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ফের বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৯ লাখ মানুষ। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য ও স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া চিত্র বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

চলতি মাসের শুরুতে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সময় তারা রাফায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। মূলত রাফায় চলমান ভয়াবহ যুদ্ধের কারণে প্রাণ বাঁচাতে শহরটির বাসিন্দা এবং আগে থেকে আশ্রয় নেওয়া গাজার অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দারা সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।

জাতিসংঘ সোমবার জানিয়েছে, গত ৬ মে থেকে শুরু করে গত ১৮ মে পর্যন্ত ১৩ দিনে রাফা থেকে প্রায় ৮ লাখ ১২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও প্রায় ১ লাখ মানুষ। সব মিলিয়ে গাজায় এই সময়ের মধ্যে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি মনে করেন-গাজায় কোনো ধরনের গণহত্যা চলছে না। এর মধ্য দিয়ে তিনি মূলত ইসরায়েলের নির্বিচার আগ্রাসনের পক্ষেই কথা বললেন। গতকাল সোমবার তিনি হোয়াইট হাউসে ইহুদির একটি উৎসবে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।

বাইডেন বলেন, ‘আমাকে স্পষ্ট করে বলতে দিন- আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিপরীতে আমি বলতে চাই, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা এটি (এই অভিযোগ) প্রত্যাখ্যান করি।’

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আরও দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যান করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে দিন, আমরা ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য আইসিসিতে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করছি।’


রাইসির মৃত্যুতে অস্থির হতে পারে ইরানের রাজনীতি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত হওয়ার পর দেশটির শাসনব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ রদবদলের আভাস পাওয়া গেছে গতকালই। তবে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয় বলে সরকারে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে হবে না ইরানের নাগরিকদের।

আলোচনাটা সর্বোচ্চ নেতার পদটি নিয়েই। ৮৫ বছর বয়সি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে রাইসিকেই দেখা হচ্ছিল। তবে তার মৃত্যুতে দেশ পরিচালনার গুরুভার কার ওপর বর্তাবে, তা নিয়ে এখন থেকেই শুরু হয়েছে মাথাব্যথা।

রাইসির মৃত্যুর পর খামেনির ছেলেই পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তটি সঠিক হবে কি না তা নিয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্যও আছে। কারণ, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দেশটিতে খামেনির ক্ষমতার বংশগত উত্তরাধিকার তৈরি হলে তা সংকট আরও বাড়াতে পারে। রাজতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও দেশটির নাগরিকদের একটি অংশ এই শাসনব্যবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচারী শাসন হিসেবে দেখেন।

ইরানের শাসনব্যবস্থা যেভাবে কাজ করে

রাষ্ট্রপতি ও সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য ইরানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে দেশের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে মত দিয়ে থাকেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনিই সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে কাজ করেন এবং শক্তিশালী বিপ্লবী গার্ডকে (আইআরজিসি) নিয়ন্ত্রণ করেন।

১২ সদস্যবিশিষ্ট গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অর্ধেক সদস্যও তার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। দেশটির রাষ্ট্রপতি, সংসদ সদস্য, এমনকি সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ পরিষদের প্রার্থীদেরও যাচাই করে এই গার্ডিয়ান কাউন্সিল।

তাত্ত্বিকভাবে, বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যরা (ধর্মগুরু) দেশে ইসলামি আইন বজায় রাখতে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করে থাকেন। তবে সর্বোচ্চ নেতা পদ্ধতির বিরোধীরা বলে থাকেন, তিনি (সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা) নিজ স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখা ও তার নিজস্ব অগ্রাধিকারগুলোকে এগিয়ে নিতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চান না। এ কারণে সব ধরনের বিরোধিতার পথ বন্ধ করে দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করেন।

সদ্য প্রয়াত ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ছিলেন কট্টরপন্থি এবং খামেনির সমর্থক। ২০২১ সালের নির্বাচনে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের কার্যত নিষ্ক্রিয় করে রাইসিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করে বিশেষজ্ঞ পরিষদ। নির্বাচনে রুহানিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও বাধা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ৮ বছর ধরে প্রেসিডেন্টের পদ সামলানো হাসান রুহানির স্থলাভিষিক্ত হন রাইসি। ইরানের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ভোট পড়ে সেবারের নির্বাচনে।

রাইসির মৃত্যুর পর সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার নির্দেশে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। ইরানের সংবিধান অনুসারে ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে কাকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে আনা হবে, সে কাজটি নিয়ে গভীরভাবে ভাববেন খামেনি, সাবধানতার সঙ্গে বেছে নেবেন অনুগত রাষ্ট্রপ্রধান। এর অর্থ এই দাঁড়াচ্ছে যে, দেশটিতে কড়া ইসলামি শাসন আরোপ চলতে থাকবে এবং ভিন্নমতকে আগের মতোই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক সংবিধানে সেই চর্চার সুযোগও কম, কারণ এটি ইউরোপীয় গণতন্ত্র নয়। এ ছাড়া দেশটির ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও পশ্চিমাদের গভীর সন্দেহের চোখে দেখা চলমান থাকবে।

ক্ষমতার উত্তরাধিকারের বিষয়ে যা হবে

ইরানের ক্ষমতায় রাষ্ট্রপতি আসবেন, যাবেন। কেউ কেউ কট্টরপন্থি, কেউবা মধ্যপন্থি হতে পারেন, তবে প্রত্যেককেই শাসনব্যবস্থার প্রতি অনুগত হয়ে কাজ করতে হয়। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হন রুহুল্লাহ খামেনি। তার মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে এই পদে আসীন হন এর আগে টানা ১০ বছর দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা সৈয়দ আলী হোসাইনি খামেনি। টানা ৩৫ বছর ধরে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার মর্যাদায় আসীন এই নেতার উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছিল হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সদ্য প্রয়াত ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে। কিন্তু তিনি আগেই চলে যাওয়ায় খামেনির এখন দুটো বড় চ্যালেঞ্জ সামনে। ইরানের জন্য একজন নতুন অনুগত প্রেসিডেন্ট ঠিক করা এবং তার নিজের উত্তরসূরি নির্বাচন করা। আলী খামেনির বয়স এখন ৮৪ বছর। তার মৃত্যুর পরই কেবল ইরানে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে।

৮৮ জন বিশেষজ্ঞ নিয়ে গড়া পরিষদের মাধ্যমে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করা হয়। ওই পরিষদের সদস্যরা আবার ১২ সদস্যের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের মাধ্যমে ৮ বছর পর পর নির্বাচিত হন।

খামেনির উত্তরাধিকারী কে হবেন- এ বিষয়ক আলোচনা বা যে কোনো কৌশল সাধারণ জনগণের অগোচরে হয়ে থাকে। ফলে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী কে হতে চলেছেন, সাধারণের পক্ষে তা আগে থেকে জানা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তবে বিশ্লেষকরা যে ২ ব্যক্তিকে খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে দেখছিলেন, তাদের একজন রাইসি, অন্যজন খামেনির ছেলে মোজতবা। ৫৫ বছর বয়সি মোজতবা একজন শিয়া ধর্মগুরু। তবে সরকারি দায়িত্ব পালনের কোনো অভিজ্ঞতা তার নেই।

মোজতবা ইরানের সর্বোচ্চ পদে বসলে যা হতে পারে

বিপ্লবের মাধ্যমে ১৯৭৯ সালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর দেশটির নেতারা ইরানকে শুধু পশ্চিমা ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের চেয়ে নয়, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিরাজমান সামরিক একনায়কতন্ত্র ও রাজতন্ত্র থেকেও অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

তবে খামেনির ছেলে সর্বোচ্চ নেতার আসনে বসলে ফের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব শুরু হতে পারে ইরানে। শুধু ইসলামি শাসনের সমালোচকদের কাছেই নয়, দেশের বর্তমান শাসনব্যবস্থা যেসব ইরানি ‘অনৈসলামিক’ বলে বিবেচনা করে, তাদের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার করতে পারে ক্ষমতার এই উত্তরাধিকার।

পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে ইরানের ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। আর ইসলামি শাসন যা রাইসির আমলে আরও তীব্র আকার ধারণ করে, দেশের নারী ও যুবাদের আরও বিচ্ছিন্ন করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছে ইরান। ২০২২ সালে মাহসা আমিনি গ্রেপ্তারের পর দেশটি বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠা এর বড় উদাহরণ। চুল না ঢেকে রাস্তায় বের হওয়ার কারণে আমিনি গ্রেপ্তার হন। এর বিরুদ্ধে ইরানজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ওই বিক্ষোভ থেকে দেশজুড়ে ৫ শতাধিক মানুষ নিহত ও ২২ হাজারের বেশি নাগরিক আটক হন।

রাইসির মৃত্যুতে তাই নতুন সর্বোচ্চ নেতা বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়াটি আরও জটিল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশটিতে ফের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। (ইরনাসহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অবলম্বনে)

বিষয়:

আকাশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিমান, একজনের মৃত্যু

প্রতিকূল পরিস্থিতির কবলে পড়া সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি মঙ্গলবার ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করে। ছবি: রয়টার্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আকাশে প্রতিকূল পরিস্থিতির কবলে পড়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে এক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন যাত্রী। উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিল। পথ পাল্টে সেটিকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করানো হয়।

আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে উড়োজাহাজটি ব্যাংককে অবতরণ করে। সেটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর মডেলের।

এক বিবৃতিতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস জানিয়েছে, এসকিউ-৩২১ নামে তাদের ওই ফ্লাইটে ২১১ জন যাত্রী ও ১৮ জন ক্রু সদস্য ছিলেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ ঘটনায় যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায় তারা। এ ছাড়া আহত যাত্রীদের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য ব্যাংককে একটি দল পাঠিয়েছে তারা।’

আকাশে বৈরী আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারণে উড়োজাহাজের প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়াটা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এতে উড়োজাহাজে সামান্য ঝাঁকুনি দেখা দিতে পারে। তবে আজ যে মারাত্মক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল, তা বিরল বলাই চলে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের সঙ্গে আসলে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।


ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে না: বাইডেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে গ্রেপ্তারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে না। এমনকি, হামাস ও ইসরায়েল সমতুল্য নয়।’

সম্প্রতি আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান বলেছেন, তিনি গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে রক্ষায় মুখ খুলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বাইডেন বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমরা ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার চেয়ে আইসিসিতে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছি।’ গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে ইহুদি আমেরিকানদের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বাইডেন আরও বলেন, ‘ইসরায়েল ও হামাস সমতুল্য নয়।’ এর কয়েক ঘণ্টা আগে কড়া ভাষার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আইসিসিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন ‘আপত্তিকর’।

একইদিনে করিম খান ঘোষণা করেছিলেন, তিনি নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের পাশাপাশি হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসেজে) গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

‘ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে না’ উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসেজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিপরীতে, গাজায় আসলে যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।’

জানুয়ারিতে আইসিজে এক রায়ে বলেছিল, গাজায় গণহত্যার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে। তাই ইসরায়েলকে যেকোনো গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে একাধিক অস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো।

সোমবার হোয়াইট হাউসের ওই অনুষ্ঠানে বাইডেন যখন ইসরায়েলকে রক্ষায় বক্তব্য দিয়ে মুহুর্মুহু করতালি পাচ্ছিলেন, তখন তার নির্বাচনি প্রচার শিবির যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে বিপর্যস্ত। যুদ্ধবিরোধী কেউ কেউ আবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘জেনোসাইড (গণহত্যা) জো’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

বিষয়:

ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২৮ই জুন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির মৃত্যুর পর দেশটিতে এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই রইসির মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের চতুর্দশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটি। আগামী ২৮ই জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল সোমবার দেশটির বিচার বিভাগ, আইনসভা এবং নির্বাহী কর্তৃপক্ষ এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনার বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনুদোলু জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের নিবন্ধন শুরু হবে চলতি মাসের ৩০ মে এবং প্রচারণা চলবে আগামী ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।

গত রোববার একটি জলাধার উদ্বোধন শেষে ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরে যাওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল-২১২ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে রইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান সহ ৯ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই সংবিধান অনুযায়ী দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি।

১৫ বছর বয়সে যে মাশহাদ ছেড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি সেই মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি। তার আগে আগামীকাল বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তাকে চির বিদায় জানাবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান। বর্তমানে রাইসির মরদেহ তাবরিজ শহরে রয়েছে। আজ তাবরিজে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই শহরে তিনি রোববারই ভ্রমণ করেছিলেন।

বিষয়:

৫ম দফায় ভারতজুড়ে শান্তিপূর্ণ ভোট, পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফা ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ছয় রাজ্য এবং দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯টি আসনে এক যোগে চলেছে ভোট গ্রহণ। ভারতজুড়ে শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হলেও পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা খবর মিলেছে।

৪৯টি আসনের মধ্যে বিহারের ৫টি, ঝাড়খণ্ডের ৩টি, মহারাষ্ট্রের ১৩টি, উড়িষ্যার ৫টি, উত্তর প্রদেশের ১৪টি, পশ্চিমবঙ্গের ৭টি এবং জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখের ১টি করে লোকসভা আসন রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ওড়িশার ৩৫টি আসনে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে।

পঞ্চম দফায় ৬৯৫ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। এ দফায় হেভিওয়েট প্রার্থী রাহুল গান্ধী, স্মৃতি ইরানি, রাজনাথ সিং, পীযূষ গয়াল, ওমর আবদুল্লাহ ও চিরাগ পাসওয়ান। উত্তর প্রদেশের আমেঠি থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে এবারও প্রার্থী করেছে বিজেপি। সোমবার সকাল থেকেই নিজের কেন্দ্রের ভোট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন তিনি। অমেঠী লোকসভার অন্তর্গত গৌরীগঞ্জ গ্রামে ভোটও দেন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুলকে হারিয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি।

এদিকে, রাহুল গান্ধী এবার প্রার্থী হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীতে। রায়বরেলীর ভোটার না হলেও ভোটের দিন নিজের কেন্দ্রেই রয়েছেন তিনি। ভোটের দিন তিনি পূজা দেন হনুমান মন্দিরে।

ভারতে মোট সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোট হবে। ১ জুন সপ্তম দফার ভোটের পর ফলাফল জানা যাবে ৪ জুন।

এ দফায় পশ্চিমবঙ্গে বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, শ্রীরামপুর, হুগলি, উলুবেরিয়া ও আরামবাগ- এই ৭টি আসনে ভোট হয়েছে। দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোটদানের হার ছিল ৬২ দশমিক ৭২ শতাংশ। এদিন সকালে ভোটগ্ৰহণ শুরু হয় শান্তিপূর্ণভাবেই। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাত আসনেই সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে বেশি সহিংসতা ঘটেছে ব্যারাকপুর, হুগলি ও হাওড়াতে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগও দিতে থাকে। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে প্রায় এক হাজারটি অভিযোগ জমা পড়েছে।

জানা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওড়ার লিলুয়ার বজরঙবলী মার্কেটের কাছে বুথের বাইরে বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুথ থেকে পালিয়ে যান ভোটাররা। ব্যারাকপুর আসনের আমডাঙায় বিজেপির এক কর্মীর বাড়ি ভেঙে ফেলার অভিযোগ ওঠে। বুথ জ্যাম, জাল ভোট, বিজেপির এজেন্টদের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

এছাড়া বিজেপি নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কোস্তভ বাগচির গাড়ি ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
ব্যারাকপুর আসনের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান ও কালো পতাকাও দেখানো হয়। হাওড়ায় বিজেপি এজেন্টদের কেন্দ্রে বসতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাছাড়া এই আসনের একটি ভোটকেন্দ্রের কাছে আইএসএফ কর্মীদের মারধর ও ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।


banner close